সম্প্রতি মাদক বিরোধী অভিজানে নিহত হয়েছেন টেকনাফের উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর একরামুল হক। এ নিয়ে সামাজিক মধ্যম এবং সারা দেশ ব্যাপী চলছে আলোচনা সমালোচনা। এবার সে ব্যাপারে কথা বললেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
একরামুল হক নিহতের ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। শনিবার দুপুরে ধানমন্ডির নিজ বাসভবনে সাংবাদিকদের তিনি একথা জানান।
আগে মাদকবিরোধী অভিযানে নিহত টেকনাফের পৌর কাউন্সিলর একরামুল হককে ঠাণ্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে বলে দাবি করে তার পরিবার।
কথিত বন্দুকযুদ্ধের সময়কার মোবাইল ফোনে কথোপকথনের একটি অডিও ক্লিপ গণমাধ্যমে প্রকাশ করেন তার স্ত্রী অয়েশা বেগম।
এর প্রতিক্রিয়ায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা স্পষ্ট করে বলতে চাই— এ ধরনের ঘটনা যদি ঘটেই থাকে, তাহলে আপনারা জানেন একজন ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনা তদন্ত করেন। একরামের ঘটনাটিতেও একজন ম্যাজিস্ট্রেট তদন্ত করছেন।’
তিনি বলেন, ‘ওই ম্যাজিস্ট্রেট যদি তদন্তের পর এই ধরনের কোনো রকম ইঙ্গিত আমাদের দেন বা কোনো নির্দেশনা দেন, তাহলে অবশ্যই সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘ম্যাজিস্ট্রেট যদি আমাদের নিশ্চিত করে দেন, একরামুল এ ধররের ঘটনার শিকার, তাহলে আইন অনুযায়ী বিচার হবে। যদি কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে কিংবা প্রলুব্ধ হয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত করে থাকেন, তাহলে আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি তো প্রথমেই বলেছি আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন। আপনারা দেখেছেন যারাই অপরাধ করছেন, তাদের কাউকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী ছাড় দিচ্ছেন না। যেই অন্যায় করবে, এ ধরনের ঘটনা ঘটাতে প্রলুব্ধ হবে, তার বিচার অবশ্যই করা হবে।’
একরামের পরিবারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি দাবি করে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা এত কথা বলছেন অথচ একরামের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত করেনি।’
প্রসঙ্গত, গত ২৯ মে দিনগত রাত একটার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কে র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন টেকনাফ পৌরসভার তিনবারের নির্বাচিত কাউন্সিলর একরামুল হক।
তিনি টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে। এ ছাড়া তিনি টেকনাফ উপজেলা যুবলীগের ১৩ বছর দায়িত্বপালনকারী সাবেক সভাপতি, টেকনাফ বাস স্টেশন ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও টেকনাফ মাইক্রো শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ছিলেন।
একরামুল হক নিহত হবার পর র্যাব-৭ কক্সবাজার ক্যাম্প থেকে ই-মেইলে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, একরাম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের তালিকাভুক্ত শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী এবং শীর্ষ গডফাদার। তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মাদক আইনে মামলা রয়েছে।
যদিও র্যাবের পাঠানো ওই বিজ্ঞপ্তিতে একরামের বাবার নাম ও ঠিকানা ভুল উল্লেখ ছিল। সেখানে বলা হয়, তার বাবার নাম মোজাহার মিয়া ওরফে আবদুস সাত্তার। বাড়ি টেকনাফ পৌরসভার নাজিরপাড়া।